সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বনেদি কলকাতার ঘর বাড়ি

         পথ চলতে চলতে চোখে পড়ে কলকাতার স্কাইলাইন কি দ্রুত পালটে যাচ্ছে। এমন একদিন হয়তো আসবে, যেদিন বহুতল বাড়ি আর ব্যস্ত রাস্তার লোকজনের ভিরে পুরনো কলকাতার  স্থাপত্যের বনেদিয়ানা একেবারেই হারিয়ে যাবে। সেই স্থাপত্যকে যতটা সম্ভব ধরে রাখতে গিয়েই, তাদের কথা বাঙালির মনে পৌঁছে দিতে গিয়েই এই প্রচেষ্টা।
       কলকাতার গলিতে-ঘুঁজিতে পুরনো ধুলোর গন্ধভরা এক একটি অট্টালিকার অন্ধকার বিশাল বিশাল কক্ষে সময় আঠারো বা উনিশ শতকে থমকে আছে। সেই কলকাতার ইতিহাস, সমাজতত্ব, সংস্কৃতি আমাদের অভিভুত না করে পারে না। 
      এই শহরকে যারা হাতে ধরে গড়ে তুলেছিল। নিজেদের পাশাপাশি এই শহরকেও করেছিল বিত্তশালী তাদের কথাই মনে করিয়ে দেয় অট্টালিকা গুলো। আজ তারা নেই, কিন্তু রয়ে গেছে তাদের স্মৃতি।
     স্থাপত্যের বহিরঙ্গের সৌন্দর্যই তার একমাত্র পরিচয় নয়। তার ভিতরের মানুষের ইতিহাস, জীবনচর্চা ও সংস্কৃতি এই সবই এই স্থাপত্যের অঙ্গ। তাই প্রাসঙ্গিক ভাবেই এসেছে বনেদি কলকাতার মানুষের কথা। প্রত্যেকটি বনেদি বাড়ির ছিল আলাদা আলাদা স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। 
         সম্পূর্ণ অন্য স্বাদের কলকাতার একটা পরিচয় তুলে না ধরলে কোথাও একটা অসম্পূর্ণতা থেকে যায়। যে কলকাতা আমাদের সামনে থেকেও নিজেকে লুকিয়ে রাখে। 

কলকাতার কিছু বনেদি বাড়ির নামঃ



সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার                                         
চোরাবাগানের মিত্র বাড়ি
হাটখোলার দত্ত বাড়ি
কাশিমবাজার রাজবাড়ি 
রামমোহন রায়ের বাড়ি
গোকুল মিত্রের বাড়ি
রাধানাথ বসুমল্লিকের বাড়ি
বেলগাছিয়া ভিলা
পাথুরি ঘাটের মল্লিক বাড়ি
ভূকৈলাস রাজবাড়ি
ঘড়িওলা বাড়ি
মতিলাল শীলের বাড়ি
রামললোচন শীলের বাড়ি
খেলাতচন্দ্র ঘোষের বাড়ি
মদনগোপাল দে'র বাড়ি
নাড়াইল হাউস
জানবাজার জমিদার বাড়ি
শেঠ বাড়ি
পোস্তা রাজবাড়ি
কবির বাড়ি
বিজয় মঞ্জিল
ধূর্জটি ধাম
বাওয়ালি মন্দল বাড়ি
বটকৃষ্ণ পালের বাড়ি
নিজাম প্যালেস
মরকত কুঞ্জ
সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি
নীরদ চন্দ্র বসু মল্লিকের বাড়ি
দর্জিপাড়া মিত্র বাড়ি
ঝামাপুকুর রাজবাড়ি
দ্বার ভাঙা রাজার বাড়ি
হরেন্দ্র কৃষ্ণ শীলের বাড়ি
হেস্টিংস হাউস
বেল্ভেডিয়ার হাউস
জোড়াবাগানের ঘোষ বাড়ি
ত্রিপুরা হাউস
ক্লাইভ হাউস
স্রিনাথ দাসের বাড়ি
অধরলাল সেনের বাড়ি
বৈকুণ্ঠ সেনের বাড়ি
নন্দ বসুর বাড়ি
রাজা নবকৃষ্ণের বাড়ি
মার্বেল প্যালেস ঃ চোরাবাগান
নস্কর বাড়ি
মেটিয়া বুরুজের নবাব বাড়ি
জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি
টেগোর প্যালেস
টাউন হল
মেটকাফ হল
অনেক ভেনাস


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চৈতন্য হত্যার অনুসন্ধানে - তমাল দাশগুপ্ত

প্রথম পর্ব  পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের পাণ্ডাদের মধ্যে একটা ভীষণ প্রবাদ চালু আছে, মালীবুড়োর শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান রহস্য বইটা আমাদের জানাচ্ছে। এই পাণ্ডারা অনেকেই গর্ব করে বলে যে চৈতন্যকে তাদের পূর্বপুরুষেরা হত্যা করেছিল। কেন করেছিল? এরা বলে, এর কারণ চৈতন্য নাকি বাংলার মুসলমান শাসকের চর ছিলেন! আর তাই চৈতন্যর উড়িষ্যায় আগমনের পরেই প্রথমবারের জন্য গৌড়ের মুসলমান শাসক উড়িষ্যায় সফলভাবে হামলা করতে পেরেছিল। সাহসীজন এ ব্যাপারে পুরীতে গিয়ে উড়িয়া পাণ্ডাদের মধ্যে খোঁজখবর করে দেখতে পারেন এরকম একটা কথা চালু আছে কি না । চৈতন্য আন্দোলনের ফলে উড়িষ্যায় মুসলমান হামলা হয়েছিল, এই বক্তব্য এমনই জোরালো হয়ে ওঠে ক্রমে, যে প্রভাত মুখার্জি তার মেডায়েভাল বৈষ্ণবিজম ইন ওড়িশা গ্রন্থে এটিকে রীতিমত তথ্য ও যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করেছেন, অর্থাৎ এটি উড়িয়ে দেওয়ার মত অকিঞ্চিতকর প্রলাপ নয়, অনেক উড়িষ্যাবাসী এতে বিশ্বাস করেন। ইন ফ্যাক্ট খোঁজ নিলে দেখবেন, অনুরূপ চাপা চৈতন্যবিদ্বেষ বাংলাভাষী হিন্দুত্ববাদীদের অনেকের আছে, এরাও একইরকম মনে করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে চৈতন্যর সাম্যময় ভক্তি আন্দোলনের ফলে পাণ্ডাদের মৌ...

বাংলায় ব্রাহ্মণ

একদা এঁরা বাংলায় আসেন, রাজাদের পৃষ্ঠপোষণায় জমিজিরেত ও হরেক সুবিধা ভোগ করেন। অতঃপর আদিশূর নামে আধা-কল্পিত এক চরিত্রকে ঘিরে নিজেদের সামাজিক মর্যাদা আরও বাড়িয়ে নেন, সেই অনুযায়ী স্মৃতি, শাস্ত্র ও কুলজিগ্রন্থ রচনা করেন। ক্রমশ বৈদিক, রাঢ়ী, বারেন্দ্র, কুলীন, ভঙ্গ ইত্যাদি হরেক ভাগে বিভক্ত হয়ে যান। এঁরাই  বাঙালি ব্রাহ্মণ! কুণাল চক্রবর্তী ২৭ মে, ২০১৮, ০০:৩৪:৩৪ ব্রাহ্মণরা বাংলার আদি অধিবাসী নয়। বস্তুত দীর্ঘ দিন বাংলা ব্রাহ্মণদের প্রভাবসীমার বাইরে ছিল। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকের নৃতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকেরা লক্ষ করেছিলেন, ‘আর্য’রা পূর্ব ভারতে কিছুটা দেরিতে পৌঁছেছিল এবং তাদের অগ্রগতি স্থানীয় মানুষ প্রতিরোধ করেছিল। বাংলা অবশ্য শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণ্য বলয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, কিন্তু প্রক্রিয়াটি খুব সহজ হয়নি। ব্রাহ্মণ্যবাদ যে ক্রমশ পূর্ব দিকে বিস্তৃত হচ্ছিল, প্রাচীন ব্রাহ্মণ্য সাহিত্যে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অথর্ব বেদেই মগধ ও অঙ্গের প্রথম নিঃসংশয় উল্লেখ আছে। এই গ্রন্থটির মতে এ দুটি ছিল ব্রাত্যদের দেশ। বঙ্গের প্রথম দ্বিধান্বিত উল্লেখ পাই ঐতরেয় আরণ্যক গ্র...

বাঙালির শাক্ত সঙ্গীত - ডঃ তমাল দাশগুপ্ত

কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ মধ্যযুগে কালীমূর্তি তৈরি করছেন এবং তারপরের চারশো বছরে বাঙালি কর্তৃক মা কালীর উপাসনা যেভাবে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে, তা থেকে স্পষ্ট যে এটি একটি ধর্মসংস্কার আন্দোলন ছিল, এবং মুষ্টিমেয় ভাবুকের ওপরতলা থেকে প্রেরিত সংস্কার নয়, ইংরেজ আমলের বিধবাবিবাহের মত, এ ছিল গণসংস্কার। সংস্কার মানেই তো শুধু অতীতকে ভাঙা নয়, কেবল রীতিনীতিকে ধ্বংস করা নয়, অনেকসময় অতীতকে নতুনভাবে রক্ষা করাও। বাঙালি প্রাচীনকাল থেকেই মাতৃকা উপাসক, তন্ত্রে আর সাংখ্যে যাকে প্রকৃতি বলে, বাঙালি সেই শক্তির উপাসক।  চার হাজার বছরের পুরোনো পাণ্ডু রাজার ঢিবিতে অনেকগুলি মাতৃকামূর্তি পাওয়া গেছে। কিন্তু এই বাঙালি জাতি এতগুলো ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে গেছে, যে তার ইতিহাস ছিন্নপত্রের মত, যার সর্বাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছে। প্রাচীনযুগে মাৎস্যন্যায় এসেছিল। মধ্যযুগে বখতিয়ার খিলজিরা এসেছেন, নালন্দা সহ সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় পুড়ে গেছে। ফলে একটানা ধারাবাহিকতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু জমি যেখানে বহু শতাব্দী ধরে উর্বরা, সেখানে সামান্য যত্নেই সোনার শস্য ফলে, সেটা শাক্তসঙ্গীতের ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়। ধর্মবিস্তার কখনই ধর্মসঙ্গীত ...